দেবীপক্ষ প্রায় দোড়গোড়ায়, প্রবল ব্যস্ততায় কলকাতার কুমোরপাড়া
![]() |
ছবি: তৃণা চৌধুরী |
তৃণা চৌধুরীঃ দোরগোড়ায় দেবীপক্ষ। ঢাকে কাঠি তো পড়ে গেছেই তার সঙ্গে জমে উঠেছে বাঙালির পুজো প্রস্তুতি। কেনাকাটা পর্ব চলছে জোরকদমে। বাংলার বাইরে থাকা প্রবাসীরা ফেরার টিকিট কাটছেন। তবে এই সব কিছুর মধ্যে সবচেয়ে ব্যস্ত কুমোরটুলি। কলকাতার সবচেয়ে বড়ো কুমোরপাড়ার বাসিন্দাদের এখন রাতে ঘুম উড়েছে। যাঁরা মাটির প্রতিমা তৈরী করেন তাঁদের সারাবছরের মধ্যে সবথেকে ব্যস্ততম সময় হল এটা। ইতিমধ্যেই বহু অর্ডারের প্রতিমা দেশের বিভিন্ন রাজ্যে এমনকী বিদেশেও পৌঁছে গিয়েছে। এখন শিল্পীরা তাই চূড়ান্ত ব্যস্ত।
কিন্তু এমন কর্মব্যস্ত সময়েও মাঝে মধ্যেই কান পাতলে কলকাতার ঐতিহ্যবাহী এই কুমোরপাড়ার অন্দর থেকে ঝামেলা-গোলযোগের আওয়াজ ভেসে আসছে। এবং তার কারণও আছে যথাযথ। আসলে এই সময় যেমন শিল্পীরা তাঁদের শেষ মূহুর্তের কাজ সামলান ঠিক তেমনই বিভিন্ন স্থানীয়, দেশি, বিদেশি ছবিওয়ালারাও এই সময় কুমোরটুলিতে আসেন। আর এখানেই তৈরী হচ্ছে যাবতীয় সমস্যা।
ফটোগ্রাফার, ভিডিওগ্রাফার কিংবা ব্লগাররা এমনিতে কুমোরটুলি মৃৎশিল্পী সংস্কৃতি সমিতি থেকে টাকা দিয়ে নিয়ম মেনে অনুমতি পত্র নিয়ে ছবি তুলছেন। কিছু কিছু ফটোগ্রাফার, ভিডিওগ্রাফার, ব্লগাররা শিল্পীদের ঘরের একেবারে ভিতরে পৌঁছে যাচ্ছেন। প্রতিমা তৈরীর ছবি বা ভিডিও নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মডেল ফোটোশুটও দেদার চলছে। আর এতেই আপত্তি তুলেছেন মৃৎশিল্পীদের একাংশ। তাঁদের দাবি অনেক কষ্ট করে, কখনো সারারাত জেগে তাঁদের কাজ সারতে হচ্ছে। তার উপরে হঠাৎ হঠাৎ বৃষ্টিতে তাঁদের কাজের যথেষ্ট ক্ষতি হচ্ছে। এই সবের মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে বিভিন্ন মানুষ দিনের বেশিরভাগ সময় এই এলাকায় আসছেন। ছবি তুলে, ভিডিও করে, শিল্পীদের নানা প্রশ্ন করে একপ্রকার বিরক্তই করছেন বলে মনে করছেন অনেক শিল্পীরা। ফোটোশুট করতে গিয়ে অনেকে মূর্তির কিছু অংশ ভেঙে ফেললে আবার সেটা ঠিক করতে কাজের সময় নষ্ট হচ্ছে।
অন্যদিকে ব্লগার বা ফোটোগ্রাফাররা জানাচ্ছেন অন্য অনেক পেশার মতো এই পুজোর সময়ে তাদেরও এই কাজটি করা জরুরী। এবং বিনা অনুমতিতে যে তাঁরা কাজ করছেন তাও না। রীতিমতো টাকা দিয়ে সমিতি থেকে অনুমতিপত্র পেয়ে তারা ছবি বা ভিডিও তোলার কাজ করছেন।
![]() |
ছবি: তৃণা চৌধুরী |
শিল্পীরা অবশ্য বলছেন মূলত ছোট দোকানঘর গুলিতেই সমস্যা হচ্ছে বেশি। রাস্তা থেকে ছবি তুললে তাঁদের তেমন কোনো সমস্যা নেই। তবে সোশ্যাল মিডিয়ার কল্যাণে যে কেউ যখন তখন ক্যামেরা সঙ্গে নিয়ে তাঁদের বিরক্ত করছেন। সবার কাছে সঠিক অনুমতিপত্র থাকছেনা। এরকম চলতে থাকলে আগামী দিনে কাজ করতে আরও অসুবিধা হবে বলে জানাচ্ছেন শিল্পীরা। এই একই কারণবসত ২০২০ সালে পুজোর আগে সংবাদমাধ্যম ছাড়া অন্য সমস্ত ধরনের ফটোগ্রাফার, ভিডিওগ্রাফার ও ব্লগারদের এলাকায় নিষিদ্ধ করেছিল কুমোরটুলি কতৃপক্ষ।
আরও পড়ুনঃ আরও একবার মহাসঙ্কটে মহেঞ্জোদারো!
(নিউজ অফবিট-এর প্রতিটি খবরের আপডেট পেতে যোগ দিন আমাদের টেলিগ্রাম গ্রুপে, আর প্রতি সপ্তাহে জিতে নিন আকর্ষণীয় পুরস্কার। www.newsoffbeat.com -এ প্রকাশিত খবর থেকে সপ্তাহের শেষে থাকবে কিছু সহজ প্রশ্ন। সেই প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়ে আপনি জিতে নিতে পারেন আকর্ষণীয় পুরস্কার এবং দুর্দান্ত সব অফার। তাহলে আর দেরি কিসের? নিচের লিংকে ক্লিক করে যোগ দিন এখনই। লিঙ্ক: https://t.me/newsoffbeat)