আসুন এই নববর্ষ উৎসর্গ করি তাঁদের

প্রাণকৃষ্ণ ঘোষ: এই প্রথম একটা নববর্ষ এসে উপস্থিত হলো যে নববর্ষে হালখাতা নেই। মিষ্টি তৈরি নেই। লাখ লাখ ক্যালেন্ডার ও পাঁজি তৈরির বরাত নেই। কলেজস্ট্রিটের প্রকাশনা দপ্তরে ভিড়ভাট্টা নেই। কফিহাউসে আড্ডার হিল্লোল নেই। কাপড়ের দোকানে যাওয়া নেই। গণেশপুজো আর লক্ষ্মীপুজোর তাড়া নেই।
এবছর মাস্ক পরার অভ্যাস আছে। সোশ্যাল ডিসট্যানসিং আছে। স্যানিটাইজার ব্যবহারের সচেতনতা আছে। পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো আছে। নারী পুরুষ নির্বিশেষে রান্নাঘরে যাওয়া আছে। সারাদিন ঘরে বসে পুরোনো সিনেমা দেখা আছে। সভ্যতার সংকটময় এই পরিস্থিতিতে আমাদের সরকারী নির্দেশ মেনে বাড়িতে বসে ভাইরাসমুক্ত দিনের জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া আর কীই বা করার আছে! যাঁদের করার আছে তাঁরা করে যাচ্ছেন। অসম্ভব লড়াই করে যাচ্ছেন ভাইরাসমুক্ত সকাল উপহার দেওয়ার জন্য। কেন্দ্র সরকার ও রাজ্য সরকার আমাদের পাশে থেকে যুদ্ধ জয়ের পথ দেখিয়ে দিচ্ছেন। ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা কি অমানুষিক পরিশ্রম করছেন মানুষকে সুস্থ করার জন্য। সাফাইকর্মীরা চারপাশ পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখছেন, স্যানিটাইজ করছেন অসম্ভব দৃঢ়তার সঙ্গে। ব্যাঙ্ক ও পোস্ট অফিসের কর্মীরা প্রতিনিয়ত লড়ে যাচ্ছেন মানুষের হাতে টাকার জোগান দেওয়ার জন্য। পুলিশ, প্রশাসন ও স্থানীয় প্রশাসনের কর্মীরা প্রতিনিয়ত লড়ে যাচ্ছেন আমাদের ভালো রাখার জন্য। বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মী, খাদ্য দপ্তরের কর্মী, রেশনিং ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত কর্মী, ঔষধের দোকানের কর্মী, মুদিখানার কর্মী, মৎস্য ব্যবসায়ী, সব্জি ব্যবসায়ী সহ আরো অনেক জরুরী পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিবর্গ অসম্ভব লড়াই করে যাচ্ছেন শুধুমাত্র আমাদের ভালো রাখার জন্য। মিডিয়াকর্মীরা পরিশ্রম করে চলেছেন আমাদের সামনে সঠিক চিত্র তুলে ধরার জন্য। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মী ও পৃষ্ঠপোষকরা আর্তের সেবায় নিজেদেরকে নিয়োজিত করেছেন।
আসুন এই নববর্ষ উৎসর্গ করি তাঁদের । তাঁদের চেষ্টাকে সম্মান করি। তাঁদের কাজকে শ্রদ্ধা করি। আসুন আমরা সরকারী নির্দেশ মেনে চলি। আসুন আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি। আসুন আমরা তাঁদের কাজকে সহজ করে দিই। এভাবেই একটা ভাইরাসমুক্ত সকাল আসুক।

0/Post a Comment/Comments

নবীনতর পূর্বতন