নিউজ অফবিট ডিজিটাল ডেস্ক: বাড়িতে অ্যাডমিট কার্ড ফেলে এসেছিল ছাত্রী। ফলে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে পারছিল না। শেষে ৫.৫ কিমি পথ পেরিয়ে বাড়ি থেকে অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে এলেন ট্রাফিক সার্জেন্ট, নিশ্চিন্তে পরীক্ষা দিল ছাত্রী। মঙ্গলবার কলকাতা পুলিশের ফেসবুক পোর্টালে এমনই খবর আপলোড করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, ওই পুলিশকর্মীর নাম চৈতন্য মল্লিক। উল্টোডাঙা ট্রাফিক গার্ডের সার্জেন্ট তিনি।
গতকাল, ২৪ ফেব্রুয়ারি, বিবেকানন্দ রোডে জয়সওয়াল বিদ্যামন্দির গার্লস স্কুলের সামনে দাঁড়িয়ে অঝোরে কাঁদছিল মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সুমন কুড়ে। অংক পরীক্ষা শুরু হতে তখন 15 মিনিট বাকি। কিন্তু তাকে পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে দিচ্ছিলেন না ইনভিজিলেটর, কারণ সে অ্যাডমিট কার্ডই আনতে ভুলে গেছে। বাড়ি অনেকটাই দূরে। অ্যাডমিট কার্ড আনতে অনেকটা সময় পেরিয়ে যাবে। সে ক্ষেত্রে আর পরীক্ষা দেওয়া হবে না। কী করবে বুঝতে না পেরে স্বাভাবিকভাবেই ভেঙে পড়েছিল কিশোরী মেয়েটি।
পরীক্ষাকেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা পুলিশকর্মীদের কাছ থেকে এই খবর পান উল্টোডাঙা ট্রাফিক গার্ডের সার্জেন্ট চৈতন্য মল্লিক। তিনি দ্রুত হাজির হন জয়সওয়াল বিদ্যামন্দির গার্লস স্কুলে। পরীক্ষা শুরু হতে তখন আর মাত্র ৫ মিনিট বাকি। প্রথমেই তিনি ধাতস্থ করার চেষ্টা করেন মেয়েটিকে। জানতে পারেন, মেয়েটির বাড়ি সাউথ ট্যাংরায়। পরীক্ষাকেন্দ্র থেকে কমপক্ষে ৫.৫ কিলোমিটার রাস্তা। চৈতন্য চিফ ইনভিজিলেটরকে অনুরোধ করেন মেয়েটিকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়ার জন্য। জানান, তিনি নিজেই যত দ্রুত সম্ভব মেয়েটির বাড়ি থেকে অ্যাডমিট কার্ড নিয়ে আসছেন। রাজি হয়ে যান ইনভিজিলেটরও। পরীক্ষাকেন্দ্রে ঢুকতে পেরে কিশোরী মেয়েটি তখন অনেকটাই আশ্বস্ত হয়েছে। তাকে ঠান্ডা মাথায় পরীক্ষা দিতে বলে সার্জেন্ট মল্লিক রওনা দেন তার বাড়ির উদ্দেশ্যে।
সুমনের মায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে দ্রুত তাঁদের বাড়িতে পৌঁছন চৈতন্য। বাড়ির অবস্থা দেখে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল, তীব্র দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই করেই পড়াশোনা চালাচ্ছে মেয়েটি। সুমনের অ্যাডমিট কার্ড তিনি পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছে দেন ১২.১০ নাগাদ। মাত্র ১০ মিনিট আগেই শুরু হয়েছিল পরীক্ষা। নির্বিঘ্নে পরীক্ষা দিয়েছে সুমন।