ঘড়ি ও সময়

রঙচটা প্রাচীরের দেওয়াল ঘেঁষে টুপ করে সন্ধ্যা নামে। হামাগুড়ি দিয়ে অন্ধকার ঢোকে আমাদের বেডরুমে। যৌনতায় মিশে থাকে জীবনের টানাপোড়েন। ক্লাসিফাইড বিজ্ঞাপনে ভরসা খুঁজতে থাকে মধ্যবিত্ত মন।  চৌকাঠের চিহ্ন রেখে যায় বদলে যাওয়া সময়, আর না বদলানো কিছু মানসিকতা দরজায় খিল দিয়ে দিনবদলের স্বপ্ন দেখে। প্রতি বুধবার সন্ধ্যায় এই আবছা আলো আঁধারিতে জমে থাক 'জীবনের ঘূর্ণিপাক'। লিখছেন প্রাণকৃষ্ণ ঘোষ




পৃথিবীর সমস্ত দিনলিপি ছুঁয়ে থাকে যে যন্ত্র তার নাম ঘড়ি। দিন পেরিয়ে রাত আসা হোক, বা রাত পেরিয়ে দিন  এই সামগ্রিক বিষয়টাই সম্পন্ন হয় ঘড়িবাবুর কঠোর তত্ত্বাবধানে। সময় নির্নায়ক যন্ত্র হিসেবে ঘড়ি ধরে রাখে সমস্ত হিসেব। সময় পেরিয়ে গেলে যেমন আর ফিরে পাওয়া যায় না তেমনি ঘড়ি বন্ধ হয়ে গেলেও থমকে যায় দিনলিপি। সময় ঠিক ভুল ঠিক করে দেয়।
হটাত ইচ্ছে হলো দাদার ব্রান্ড নিউ বাইকটা নিয়ে একটু টহল দিতে বেরোবেন। বেরোলেনও। মাঝ রাস্তায় ট্রাফিকের খপ্পরে পড়লেন। ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই যে! ওই যে সময়। মানে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার সময় হয়নি। অর্থাৎ আপনি নিজেকে যতই বড় হয়ে গেছেন ভাবুন সময় কানে কামড়ে আপনাকে জানিয়ে দিল যে আপনি এখনো নাবালক! আপনি রোজ স্টেশনে গিয়ে পাঁচ-দশ মিনিট ট্রেনের অপেক্ষা করেন। কিন্তু তাই বলে আজ বউ এর হাতের স্পেশাল মোচার ঘন্ট খেতে গিয়ে পাঁচ মিনিট দেরি হয়ে গেল বলে ট্রেন কিন্তু আপনার জন্য দাঁড়িয়ে থাকবে না। আপনি প্ল্যাটফর্মের এপার থেকে দেখবেন ট্রেনটা হুইসল বাজিয়ে চলে গেল।
জলস্রোত যেমন কারো জন্য অপেক্ষা না করে ছাপ ফেলতে ফেলতে এগিয়ে যায় তেমনি সময়ও এগিয়ে চলে নিজের খেয়ালে। ঘড়ি সময়ের হিসেব তুলে রাখে। কড়ায় গণ্ডায় ফেরতও দেয়। ঘড়িবাবু সময় শেষ বলার আগেই এই লেখা শেষ করে নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে দিতে হবে।

0/Post a Comment/Comments

নবীনতর পূর্বতন