আসন ধরে বিশ্লেষণ, উত্তর থেকে দক্ষিণ, কে কোথায় এগিয়ে



নিউজ অফবিট ডিজিটাল ডেস্কবুথ-ফেরত সমীক্ষা বলছে দেশে বিজেপির জয়জয়কার। রাজ্যেও জোড়া ফুল চাপা দিয়ে পদ্ম ফোটার আভাস দিচ্ছে সমীক্ষা। তবে বুথ ফেরত সমীক্ষার ফলাফল কতটা প্রতিফলিত হবে তা ২৩ মে বোঝা যাবে। নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে আগাম ভবিষ্যৎবাণী করাটা যথেষ্ট কঠিন কাজ। তাই আমরা সেই পথে না হেঁটে লোকসভা ভিত্তিক বিশ্লেষণ করি কার পাল্লা ভারী।  

কলকাতা দক্ষিণ: শুরু করা যাক মুখ্যমন্ত্রীর খাসতালুক দিয়ে। তাঁর গর কালীঘাট এই কেন্দ্রের। হাতের তালুর মতো তিনি কেন্দ্রকে চেনেন। কেন্দ্রের উন্নয়নেও নজর কেড়েছেন। আর আদি গঙ্গায় কোনও চোরা স্রোত নেই। যে স্রোত আছে তাতে নিশ্চিত ভাবে বলা যায় বৈতরণী পার করবেন তৃণমূল প্রার্থী মালা রায়।

কলকাতা উত্তর: লড়াইটা এখানে জোরদার। সংগঠন থেকে উন্নয়নে নজর কেড়েছে তৃণমূল।টক্কর দিয়েছে বিজেপি। তবে গতবার এই কেন্দ্রে তৃণমূল বিজেপির থেকে ১৩৬৩৩৯ ভোটে এগিয়েছিল। বিজেপির থেকে ১৭ হাজার ভোটে পিছিয়ে ছিল বামেরা। এবার সেখানে বাম ভোট কাটাকুটির খেলার বিজেপি ভালো ফল করতে পারে। তবে সংগঠনের নিরিখে এগিয়ে তৃণমূল

যাদবপুর: এখানে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী মিমি চক্রবর্তী। যাদবপুরের মতো এলাকায় সেলিব্রিটি ফ্যাক্টর কাজ না করলেও ভাঙড়ের মতো পঞ্চায়েত এলাকায় কিছুটা কাজ করতে পারে। বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য সংগঠনের দিক থেকে অনেক এগিয়ে। তবে এবার বিজেপির ভোট কাটার খেলায় এগিয়ে যেতে পারে তৃণমূল। 



ডায়মন্ড হারবার: এখানে ফুটে রয়েছে জোড়া ফুল। বিরোধীদের দাঁত ফোটানো কঠিন। কারণ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের খাসতালুক বিজেপি এখানে এমন কিছু করতে পারেনি যা তৃণমূলকে টলিয়ে দিতে পারে। যদিও এখানে মূল লড়াই তৃণমূল বনাম বাম।তাই এখানেও বিরোধী ভোট কাটাকুটির খেলায় অনেকটাই এগিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

মথুরাপুর:এখানে বিজেপির হাওয়া রয়েছে প্রধানমন্ত্রী প্রচার করে যাওয়ার পর সেই হাওয়া আরও গতি পেয়েছে। ওপর দিকে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল।  তাছাড়া এখানে বাম ভোট কেটে এগিয়ে যেতে পারে বিজেপি  

জয়নগরএখানে মূল লড়াই বাম বনাম তৃণমূলপ্রতিপক্ষ বাম প্রার্থী সুভাষ নস্কর নজর কাড়লেও সংঘটনের নিরিখে এগিয়ে তৃণমূলের প্রতিমা মণ্ডল।তাছাড়া গতবার বামেরা এক লাখের মতো ভোটে  পিছিয়ে ছিলেন। এবার সেই ভোট টানার মতো কোনো ম্যাজিক তিনি দেখাতে পারেনি। উল্টে কিছুটা বিজেপি হাওয়া এসেছে। তাই ফুটতে পারে জোড়াফুল।

বসিরহাটবিজেপির সায়ন্তন বসু প্রচারের আলোয় ছিলেন।  সংগঠনও ভালোই। তবে সংখ্যালঘু প্রবল কেন্দ্রে  বাধ সাধতে পারে বিজেপির হিন্দু নীতি। এই কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোট টেনে এগিয়ে যেতে পারে তৃণমূলের তারকা প্রার্থী নুসরত জাহান।



দমদম: এই কেন্দ্রে বিজেপির একটা ভোট ব্যাঙ্ক আছে। তাছাড়া প্রচার করে গেছেন প্রধানমন্ত্রী। কিছুটা বামদের ভোট কেটে ভালো ফল করতে পারে বিজেপির শমীক ভট্টাচার্য। কিন্তু এলাকার সমস্ত ইউনিয়ন শাসক দলের অধীনে। তাই প্রচার হয়েছে ভালো। দলের প্রভাবও আছে। তাছাড়া গতবার এখানে তৃতীয় স্থানে ছিল বিজেপি। শাসক দলের থেকে ২২৮৪২৫ ভোটে পিছিয়ে। এবার সেই অঙ্কটা পূরণ করা একটু কঠিন। বরং এগিয়ে  তৃণমূল 

বারাসতএই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী কাকলি ঘোষ দস্তিদারের সংঘঠনের কাছে কেউ ধারে কাছেই আসে না। কোন হাওয়া, কোনও ফ্যাক্টর এতটা জোরদার নয় যা  তৃণমূলকে টলিয়ে দিতে পারে।   

বারাকপুর: এখানে লড়াই সিংহ এবং হাতির। একজনের আছে প্রভাব। সুনাম। আর একজন নিজের এলাকায় শের। তবে সেটা তুলনামূলক ভাবে ভাটপাড়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। প্রথমদিকে প্রচারও সেভাবে শুরু করতে পারেনি। তবে সেই ঘাটতি পূরণ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং প্রচারে এসে। বিজেপির পালে জোড় হাওয়া লেগেছে। তাই দীনেশ ত্রিবেদী এগিয়ে থাকলেও বাম ভোট রামে যাওয়ার কারণে এগিয়ে যেতে পারে বিজেপিই।

শ্রীরামপুর:  বিজেপির দেবজিত সরকার ভালোই লড়াই দেবে। সংগঠন ভালো। তবে ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তায় এগিয়ে তৃণমূলের কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। 



উলুবেড়িয়ায়:তৃণমূলের সুলতান আহমেদের জনপ্রিয়তা ভর করে ও তাঁর আবেগ কাজে লাগিয়ে এবারে তাঁর স্ত্রী সাজদা আহমেদ বিজেপি প্রার্থী জয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের থেকে কয়েক কদম এগিয়ে

হাওড়া: স্বচ্ছ ভাবমূর্তি,সঙ্গে মোহনবাগান আবেগ। ভোট টানবেন প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে অন্দরের খবর, এখানে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জেরে বেশ কিছু ভোট সুয়িং করতে পারে  গেরুয়া শিবিরে। তেমটা হলে লড়াই দিচ্ছেন বিজেপি 

হুগলি:দুই হেভিওয়েটের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই।তবে,জনসংযোগে এগিয়ে তৃণমূলের রত্না দে নাগ।কিন্তু এই কেন্দ্রে সংখ্যা লঘু ভোটার কম হওয়ায় হিন্দু ফ্যাক্টর কাজ দিলে আর বাম ভোট কিছুটা কাটলে এগিয়ে যেতে পারেন লকেট।  

আরামবাগ: এই কেন্দ্র শাসক দলের পক্ষেই ভোট রায় দেয় এবারেও সেই ট্রেন্ডই বজায় থাকলে এগিয়ে অপরূপা পোদ্দার।

তমলুক: একসময় বামেদের রাজত্ব তৃণমূলের খাসতালুক। এখন এখানে তৃণমূলের সংগঠনের সঙ্গে টেক্কা দেওয়ার মতো  কেউ নেই।

কাঁথি:এখানে একটাই নাম শিশির অধিকারী।তাঁর নামেই পতাকা ওড়ে, তাঁর নামেই ভোট হয়। টেক্কা দেওয়ার মতো এখনও কেউ নেই।

ঘাটাল:দেবই একমাত্র এমপি যে এমপি কোটার প্রায় সব টাকা খরচ করেছে। অনেক কাজ করেছেন। এলাকায় সুনাম আছে। ব্যাবহার ভালো। তার উপর তারকা। অপরদিকে  ভারতী ঘোষকে নিয়ে এলকার মানুষের অনেক ক্ষোভ রয়েছে। তাই এগিয়ে দেব।


ঝাড়গ্রাম:পুরুলিয়ার মতো এখানেও জঙ্গলমহলের আসনগুলিতে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে বিজেপি। অপরদিকে জঙ্গলমহলের রাস্তাঘাট উন্নতি হয়েছে। ২ টাকা কেজি চাল মিলছে। মাওবাদী সমস্যা মিটে এসেছে। জঙ্গলমহল এখন শান্ত। তাছাড়া গতবার এখানে বামেদের থেকে ৩ লাখের বেশি ভোটে এগিয়ে ছিল শাসক দল। বিজেপির ভোট ছিল এক লাখের কিছু বেশি। বামেদের অধিকাংশ ভোট  কাটলেও পিছিয়ে গেরুয়া শিবির

মেদিনীপুর:এখানে বিজেপির হাওয়া রয়েছে। রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ এলাকায় জনপ্রিয়।অপরদিকে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকটআর বামেদেরও একটা ভোট ব্যাঙ্ক রয়েছে। তাই দুতরফ থেকে কিছু ভোট কাটতে পারলেই এগিয়ে যাবেন দিলীপ ঘোষ

পুরুলিয়া:আদিবাসী অধ্যুষিত এই এলাকায় বিজেপি বেশ ভালোই প্রভাব বিস্তার করেছে। পঞ্চায়েতেও সেই ইঙ্গিত মিলেছিল। প্রধানমন্ত্রী প্রচারে আসার পর বিজেপির জনপ্রিয়তাও চোখে পড়েছে।  এই কেন্দ্রে সংখ্যালঘু ভোটার কম। তাই হিন্দু ফ্যাক্টরের জোড়ে পুরুলিয়ায় পদ্ম ফুটতে পারে

বাঁকুড়া:বাঁকুড়াতে বিজেপির চোরাস্রোতের প্রমাণ মিলেছিল গতবারই।বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকারের সংগঠন বেশ ভালো। এখানেও বাম ভোট টানতে পারে বিজেপি। তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মতো শক্ত সংগঠককে প্রার্থী কারায় এগিয়ে শাসক দল।




বিষ্ণুপুর: গতবারের তৃণমূলের বিজয়ী প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ এবার বিজেপি প্রার্থী। বিশাল এলাকা জুড়ে থাকা এই কেন্দ্রে নিজস্ব সংগঠনের জোড় বিশেষ নেই। এই এলাকায় দলই কথা হবে। আর শাসকদলের দিকেই হাওয়া থাকে। তাছাড়া এবার ভোটের বেশ কিছুদিন আগে থেকে আদালতের নির্দেশে বিষ্ণুপুর এলাকায় ঢুকতে পারেননি সৌমিত্র খাঁ। তাই এগিয়ে তৃণমূল প্রার্থী শ্যামল সাঁতরা।

বোলপুর:অনুব্রত মণ্ডলের খাসতালুক। নকুল দানা, গুড় বাতাসার জোড় রয়েছে। তাছাড়া এবার তৃণমূল প্রার্থী অসিত মাল কংগ্রেসের দীর্ঘদিনের কর্মী ।কংগ্রেসের ভোট টানবেন। তাই বিজেপির সংগঠন ভালো হলেও কিছুটা এগিয়ে তিনি।

বীরভূমহাড্ডাহাড্ডি লাড়াই। এখানে বিজেপির সংগঠন ভালো। তবে মনে রাখতে হবে এখানে সংখ্যালঘু ভোট বড় ফ্যাক্টর। তাই এগিয়ে তৃণমূল প্রার্থী শতাব্দী রায়

আসানসোল:দুই তারকার লড়াই। গতবার লোকসভা ভোটে তৃণমূলের দলীয় কোন্দল কাজ করেছিল। এবার সেটা মিটে গিয়েছে। তাই শাসক দলের সংগঠন ভালো। অপরদিকে এই এলাকায় অবাঙালি ভোটারদের মধ্যে বিজেপির জনপ্রিয়তা রয়েছে। তাছাড়া বাবুলের একটা ভালো সংগঠন তৈরি হয়েছে। তাঁর ইমেজ ভালো। কিন্তু তৃণমূল প্রার্থী মুনমুন সেন  লড়াইয়ের প্রথম দিন থেকে মায়ের নামে ভড় করে বৈতরণী পার হতে চেয়েছেন। সেই আবেগ বাঙালিদের মধ্যে কাজ করলেও অবাঙালিদের মধ্যে অতটা কাজ করবে না। তাই এগিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়।   


বর্ধমান-দুর্গাপুর:এই কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী দার্জিলিংয়ের বিদায়ী সাংসদ এস এস আলুওয়ালিয়া। কিন্তু এলাকায় সংগঠনের দিক থেকে এবং প্রচারের দিকে অনেকটা এগিয়ে তৃণমূলের মমতাজ সংঘমিতা।  

বর্ধমান পূর্ব:মূলত কৃষি প্রধান এলাকায় জনপ্রিয়তার নিরিখে অনেক এগিয়ে সুনীল মণ্ডল। বিজেপির একটা চোরাস্রোত থাকলেও ফসলের দাম নিয়ে বিজেপির প্রতি মানুষের একটা ক্ষোভ রয়েছে।  তাই দক্ষিণ দামোদর এলাকায়র সৌজন্যে অনেকটা এগিয়ে তৃণমূল.

রানাঘাট: এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থী নিয়ে একটা ক্ষোভ আছে। প্রয়াত তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিত বিশ্বাসের স্ত্রী রূপালি বিশ্বাস এবার প্রার্থী। কিন্তু সত্যজিত বিশ্বাসের শক্রুও কম নেই। তাছাড়া দলে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রবল। তাই এগিয়ে বিজেপির জগন্নাথ সরকার।

বনগাঁ:এখানে লড়াইটা মূলত ঠাকুরবাড়ির লড়াই। বিজেপির ভোট ব্যাঙ্ক থাকলেও শান্তনু প্রার্থী হওয়ায় বিজেপির একাংশেই ক্ষোভ রয়েছেসীমান্ত এলাকায় সংখ্যা লঘু ভোটে ভর করে  কিছুটা এগিয়ে তৃণমূল প্রার্থী মমতাবালা ঠাকুর।


কৃষ্ণনগর: ভালো লড়াই করছেন বিজেপির কল্যাণ চৌবে। সংগঠন ভালো। তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র পিছিয়ে নেই। বিধায়ক হিসেবে ভালো রেকর্ড। কিন্তু গতবার এখানে বিজেপি তৃতীয় স্থানে থাকলেও দ্বিতীয় স্থানে থাকা বামেদের সঙ্গে ভালো টক্কর দিয়েছিল। তৃণমূলের সঙ্গে ভোটের ব্যবধান ছিল এক লাখের মতো। এবার বামেদের থেকে কিছু ভোট কাটলে এগিয়ে যাবে বিজেপি। 




বহরমপুর:অধীর চৌধুরির খাসতালুকে তৃণমূল এবার ভালোই লড়াই দেবেযদিও অধীর চৌধুরির জনপ্রিয়তা এবং সংগঠন অনেকটা কমেছে। কিন্তু গতবার তৃণমূলের দ্বিগুণের বেশি ভোট পেয়েছিলেন অধীর। তাই বলা যায় নিশ্চিত ভোট ব্যাঙ্কে ভর করে এগিয়ে তিনি।

জঙ্গিপুর : রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের পুত্র অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় সংগঠন ভালো। তবে শক্তি বাড়িয়েছে তৃণমূল। প্রচারেও এগিয়ে ছিল। ফলেও এগিয়ে থাকতে পারেন।  

মুর্শিদাবাদ:মূলত কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেসের কঠিন লড়াই। গতবার জয়ী সিপিআই। এদিকে ফ্রেমে ঢুকছে বিজেপি। তাই  বিরোধী শিবিরের ভোট কাটাকাটিতে শেষ পর্যন্ত বাজিমাত করতে পারেন তৃণমূলের আবু তাহের।

মালদহ দক্ষিণ: গতবার এই কেন্দ্রে বিজেপি ছিল দুনম্বরে।  বামেরা তিন। আর তৃণমূল চার।  এবার তৃণমূল শক্তি বাড়ালেও জনপ্রিয়তার নিরিখে এগিয়ে কংগ্রেস।



মালদহ উত্তর:এই কেন্দ্রটি কংগ্রেস-তৃণমূল-বিজেপি হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। গতবারের কংগ্রেসের বিজয়ী  প্রার্থী মৌসম নূর এবারের তৃণমূল প্রার্থী। সেই হিসাবে কংগ্রেসের ভোট কিছুটা টানবে। গতবার বামেরা ছিল দুনম্বরে। এবার সেই ভোট কিছুটা ভাগাভাগি হবে।  আর জনপ্রিয়তার নিরিখেখানিকটা এগিয়ে মৌসম।

রায়গঞ্জ: এই আসনে সিপিএমের মহম্মদ সেলিম, কংগ্রেসের দীপা দাশমুন্সী, তৃণমূলের কানাইয়ালাল আগরওয়াল, এবং বিজেপির দেবশ্রী চৌধুরির জোড় লড়াই।  গতবার মাত্র হাজার দুয়েক ভোটে কংগ্রেসের থেকে জিতেছিল ছিল বামেরা। তিন নম্বর স্থানে ছিল বিজেপি।  তবে এবার মেরুকরণের রাজনীতিতে হিন্দু ভোটারদের কাছে টানতে পারে বিজেপি। আবার সংখ্যালঘু ভোট তিন হবে।  তাই ভোট কাটাকাটির খেলায় এগিয়ে বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরি।

বালুরঘাট:  এলাকায় তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকট। অর্পিতা ঘোষেকে প্রার্থী করা নিয়েও  স্থানীয় নেতাদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে। এলাকায় অর্পিতা ঘোষের ভাবমূর্তিও খুব একটা ভালো নয়।  গতবার এই আসনে দ্বিতীয় স্থানে ছিল আরএসপি। এবার দলের সংগঠন খুব একটা ভালো নয়। তাঁদের কিছু ভোট কাটলে এগিয়ে যেতে পারে বিজেপি। 

দার্জিলিং: গতবার এই কেন্দ্রে প্রায় দুই লাখ ভোটে এগিয়ে ছিল বিজেপি। এবারও ভালো প্রভাব আছে। তবে তৃণমূলের অমর সিং রাই কিছুটা লিড পেতে পারেন। কিন্তু আবার বিমল গুরুং পন্থীরা পদ্মে ছাপ মারবে বলা বাহুল্য। তাই এই কেন্দ্রেও এগিয়ে বিজেপি।

জলপাইগুড়ি: গতবার এই কেন্দ্রে তৃণমূল প্রার্থীর মোট ভোটের অর্ধেকের কম ভোট পেয়েছিল বিজেপি। তৃণমূলের পরে ছিল বামেরা। লিড ছিল ৭০ হাজারের মতো। এবার এলাকায় বিজেপির সংগঠন ততটা মজবুত নয়। এবারও এগিয়ে তৃণমূল। 

আলিপুরদুয়ার: এখানে বিজেপির সংগঠন বেশ ভালো।  বিজেপি প্রার্থী জন বারলা গোর্খা এবং আদিবাসীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়।  ওদিকে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব প্রবল। এখানে সংখ্যালঘু ভোটার কম। তাই বাম ভোট কেটে এগিয়ে যেতে পারে বিজেপি। 

কোচবিহার: একসময়ের তৃণমূল নেতা নিশিথ প্রামাণিক এবারের  বিজেপির প্রার্থী। অন্যদিকে, তৃণমূল প্রার্থী পরেশ চন্দ্র অধিকারী। এই কেন্দ্রে তৃণমূল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে। কিন্তু ভুলে গেলে চলবে না গতবার বিজেপির থেকে তিন লাখের বেশি ভোটে এগিয়ে ছিল তৃণমূল। বিজেপির থেকে দ্বিগুণের বেশি ভোট পেয়ে ফরওয়াড ব্লক ছিল দ্বিতীয় স্থানে যা তৃণমূলের থেকে ৮৭ হাজারের কিছু কিমি.। এবারের বামেদের থেকে তৃণমূলের সংগঠন ভালো। তাই এগিয়ে শাসক দল। 

তৃণমূল- ২৭, বিজেপি- ১৩, কংগ্রেস-২ 


0/Post a Comment/Comments

নবীনতর পূর্বতন