কথিত আছে, এক ব্রাহ্মন দম্পতি খুব ধার্মিক ছিলেন। তাঁরা নিয়মিত পুজো-আচ্চা করতেন। তাঁদের পাঁচ সন্তান ছিল। সন্তানের মঙ্গল কামনায় ব্রত করতেন। কিন্তু ফল হল না। অকালে মারা গেলে সব সন্তান। এই দুঃসহ ঘটনার পর ওই দম্পতির ঠাকুরদেবতায় বিশ্বাস চলে গেল। গভীর দুঃখে তাঁরা ঠিক করলেন সব কিছু ছেড়ে কাশীবাসী হবেন। করলেনও তাই। একদিন তাঁরা দশাশ্বমেধ ঘাটে স্নান করলেন। ভক্তিভরে অন্নপূর্ণার পুজো করলেন। তারপর মনের দুঃখে বসে রইলেন মণিকর্ণিকার ঘাটে। এমন সময় সেখানে মা-ষষ্ঠী এক বুড়ি বেশে এসে উপস্থিত। ষষ্ঠী বুড়ি বললেন " কী ভাবছ গো মা?" বাহ্মনী বললেন "আমারা পাঁচ সন্তানকে হারিয়েছি। আমাদের পুজো-ব্রত সব বিফলে গেল। সব অদৃষ্ট। ঠাকুর দেবতা বলে কিছুই নেই। "
ষষ্ঠীবুড়ি বললেন "বারব্রত নিষ্ফল হয় না মা। তবে ধর্মকর্ম যাই কর, তাঁর জন্য ঈশ্বরে বিশ্বাস চাই। তুমি মা-ষষ্ঠীকে মানো? তাঁর পুজো করেছ কখনো? তিনি সন্তানদের পালন করেন।'' বাহ্মনী বললেন "আমি এতদিন সব ষষ্ঠী করেছি। তবুও আমার ছেলেরা বাঁচল না।'' ষষ্ঠীবুড়ি বললেন “তুমি কখনো নীলষষ্ঠীর পুজো করেছ? চৈত্র সংক্রান্তির আগের দিন উপোস করে শিবের পুজো করবে। শিবের ঘরে বাতি জ্বেলে জল খাবে। সন্তানদের মঙ্গলকামনা করবে”। ব্রাহ্মন দম্পতি বাড়ি ফিরে এলেন। বাহ্মনী ষষ্ঠীবুড়ির কথামত নীলষষ্ঠীর পুজো করলেন। বছর পেরোতে না পেরোতেই ব্রাহ্মন দম্পতি কোল আলো করে সন্তান এল।
সেই থেকেই হিন্দু ধর্মে মা ষষ্ঠীর পুজোর প্রচলন। এদিন বাড়িতে ভাত রান্না করা হয় না। সাবু আর কাঁচা মুগডাল ভিজিয়ে খাওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। অনেকে লুচি, সুজিও খান।