ফুচকা মানেই জিভে জল

রঙচটা প্রাচীরের দেওয়াল ঘেঁষে টুপ করে সন্ধ্যা নামে। হামাগুড়ি দিয়ে অন্ধকার ঢোকে আমাদের বেডরুমে। যৌনতায় মিশে থাকে জীবনের টানাপোড়েন। ক্লাসিফাইড বিজ্ঞাপনে ভরসা খুঁজতে থাকে মধ্যবিত্ত মন।  চৌকাঠের চিহ্ন রেখে যায় বদলে যাওয়া সময়, আর না বদলানো কিছু মানসিকতা দরজায় খিল দিয়ে দিনবদলের স্বপ্ন দেখে। প্রতি বুধবার সন্ধ্যায় এই আবছা আলো আঁধারিতে জমে থাক 'জীবনের ঘূর্ণিপাক'। লিখছেন প্রাণকৃষ্ণ ঘোষ

ফুচকা। জিভে জল আনার জন্য এই একটি শব্দের উচ্চারণই যথেষ্ট। আপনি সদ্য প্রেমে পড়েছেন? – ফুচকা খান। আপনার আজ পনেরোতম বিবাহ বার্ষিকী? – ফুচকা খান। আপনি আজ পনেরো মিনিট দেরি করেছেন? প্রেমিকাকে নিয়ে সবার আগে ফুচকার লাইনে দাঁড় করিয়ে, হাতে শালপাতার বাটিটা ধরিয়ে দিন। এ যাত্রা বেঁচে যাবেন মশাই। অফিস থেকে ফিরতে দেরি করে ফেলেছেন, বিয়েবাড়ি পৌঁছতে খানিক দেরি হয়ে গেছে আপনার জন্য? আরে মশাই বউ পরে দেখবেন। সোজা পা বাড়ান ফুচকার কাউন্টারের দিকে। বউ যাতে তাড়াতাড়ি ফুচকা পেতে পারেন তার ব্যবস্থা করুন। ওঁর ভ্যানিটি ব্যাগটা নিজের হাতে নিয়ে ওঁর বাটি থেকে একপিস ফুচকা টেস্ট করতে করতে বলুন অসাধারণ। ইয়াম্মি। আপনার দেরি হওয়াটা দেখবেন আর কোনো ইস্যুই নয়। আসলে আট থেকে আশি, বাঙালি মজে আছে ফুচকাতে। কম পয়সায় পুষ্টিকর খাদ্য। আগে একজন দশটাকার ফুচকা খেয়ে শেষ করতে পারলে কলার তুলে ঘোরা যেত। এখন সেই পরিস্থিতি না থাকলেও ফুচকার জনপ্রিয়তা একটুও কমেনি, বরং বেড়েছে। তেঁতুলগোলা জলটা পরখ করার জন্য জল ফুচকা হোক বা দই ফুচকা। স্পেশাল ফুচকা হোক বা শুকনো ফুচকা--ফুচকা মানেই জিভে জল। রাগ কমাবার গোপনাস্ত্রও বটে। 

0/Post a Comment/Comments

নবীনতর পূর্বতন