চৈত্রের শেষ বিকেলে বসন্তপাখিরা

অদ্রিজা মণ্ডলঃ চৈত্রের বিকেলটা সেদিন হঠাৎ একটা পাখি হয়ে উড়ে গেল। যাবার আগে রাঙিয়ে দিয়ে যাবার আশায় খানিক রঙ ধার নিতে গেল রুদ্রপলাশের কাছে। সেখানে তখন তোমার দেওয়া ভুল ধারণার খোঁচাগুলি কাঁটা হয়ে ফুটছে কৌতুকের মোড়কে। না, পলাশ গাছে তো কেউ কখনো কাঁটা দেখেনি। ছোট্ট পাখিটি তখন আপ্রাণ চেষ্টায় চঞ্চুরেণুতে ফুটিয়ে তুললো একের পর এক পারিজাত। 
পলাশ-সজ্জিতারা মেতেছিল বসন্তযাপনে। হঠাৎ রয়টারের কবুতরসখা খবর দিয়ে গেল, কারা যেন ছন্দোপতন ঘটিয়েছে শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্য-পরম্পরায়। ঠিক তখনই, নীচে থেকে আসতে লাগলো গনগনে তাপ। ভীত চোখে পাখি দেখে, পেলব সবুজ কচিপাতার বনে কারা যেন আদিম উল্লাসে আগুন লাগিয়েছে। সেই তাপে পুড়ছে সুন্দর, ছাই হচ্ছে ভালোবাসা, খাক হয়ে যাচ্ছে বাকল। 
দুরুদুরু বুক বুঝে পায় না কেন এমন হয়। হঠাতই পাখিটা তার ছোট্ট ডানাদুটিকে দুপাশে মেলে ধরে। আরো, আরো বড় করতে চায় ডানাদুটো। শালবনের কিশলয়রাও সেই প্রচেষ্টায় যোগ দেয় । জ়্বলন্ত আঁচ কমে হঠাৎ শ্যামল আচ্ছাদন। আকাশ ছুঁতে চাওয়া শাল আর আকাশমণির ডাকে নেমে আসে মেঘেরা... ফোঁটা ফোঁটা সিঞ্চনে প্রাণ দেয় আনন্দবৃষ্টি। 
দিকচক্রবালের অবাক অরণ্যে তখন পাখির বিরাট ডানার নীচে মুগ্ধ আশ্লেষে মগ্ন যুগল। আর একটু আগেই যারা আগুন লাগিয়েছিল, আর যারা সুর হারিয়ে ফেলেছিল- সবাই যেন কী এক ঐকতানে মেতে ফেসবুকের দেওয়াল থেকে নিয়েও ফাগ মাখাচ্ছে এ ওর গালে।

0/Post a Comment/Comments

নবীনতর পূর্বতন