নিউজ অফবিট ডিজিটাল ডেস্কঃ ভালো ঘুমান, ভালো থাকুন। এই উদ্দশ্য নিয়েই শুরু বিশ্ব ঘুম দিবস। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে দৈনন্দিন জীবনে মাথাব্যথা, মেজাজ খিটখিটে থাকা, সব সময় ক্লান্তি ভোগ করা, অবসাদগ্রস্ত থাকা, একাকিত্ব বোধ করা ইত্যাদি সমস্যার মুখোমুখি হতে পারে। কিন্তু অনেক সময় ঘুমাতে চাইলেও ঘুম হয় না। তাই নিশ্চিন্তে ঘুমানোর কিছু পরামর্শ।
১. সাধারণত ছুটির দিনে বেশি ঘুমের প্রবণতা দেখা যায়। কোনো দেশে সাপ্তাহিক ছুটি রোববার। বেশির ভাগ মুসলিম অধ্যুষিত দেশে শুক্রবার। তাই ছুটির আগের রাতে কাজ শেষে রাতে ঘুমাতে গিয়ে ছুটির দিন সকালে বেশ দেরি করে ঘুম থেকে ওঠেন। ফলে ছুটির দিন রাতে ঘুম কম হয়। এতে করে পরদিন কাজে গিয়ে শরীর ও মন কাজের উপযোগী থাকে না। অ্যাডিলেইডসের ফিন্ডার্স ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক লিন্ডন ল্যাক এক গবেষণায় দেখেছেন, ছুটির দিনে দুই ঘণ্টা বেশি ঘুমালে বডি ক্লক ৪৫ মিনিট বিলম্বিত হয়। তাই সপ্তাহ শুরুর দিনের কাজে আপনাকে পরিশ্রান্ত মনে হবে। তাঁর পরামর্শ, ছুটির দিনে শরীরে ভিটামিন ‘ডি' পাওয়ার জন্য ৬ থেকে ৮ মিনিট রোদ-তাপ লাগান। এমনকি কিছুটা দেরিতে উঠলেও রোদ-তাপ লাগাতে ভুলবেন না। কারণ সূর্যের আলো আপনার দেহঘড়ি ঠিক রাখে। প্রয়োজনে দুপুর বেলা স্বল্পসময় ঘুমিয়ে নিন।
২. ঘুমের সমস্যা থাকলে চেরি, দুধ ও কলা খেতে পারেন। চেরির মধ্যে রয়েছে মেলাটোনিন। এটি ঘুম আসতে সাহায্য করে। যাঁরা ক্রনিক ইনসোমনিয়ায় ভুগছেন, তাঁরা চেরির জুস খেতে পারেন। এটি ঘুমের গুণগত মান এবং ঘুমের সময়কে বাড়াতে সাহায্য করে। আর দুধের মধ্যে ট্রাইপোফেন নামে এমাইনো এসিড রয়েছে। এটি মস্তিষ্ক থেকে সেরোটোনিন নামে রাসায়নিক পদার্থ বের করতে কাজ করে। আর এতে ঘুম ভালো হয়। কলাও ঘুম ভালো করতে কাজ করে। কলার মধ্যে রয়েছে পেশি শিথিলকারী ম্যাগনেশিয়াম, পটাশিয়াম। তাই ভালো ঘুমের জন্য খাদ্যতালিকায় কলা রাখতে পারেন।
৩. ঘুমের জন্য সময় নির্দিষ্ট করুন, ধরুন রাত ১২টা থেকে সকাল ৭ টা। দিবানিদ্রা যেন ৪৫ মিনিটের বেশি না হয়। খাদ্য তালিকা ঠিকঠাক করতে হবে। ঘুমানোর ৬ ঘণ্টা আগে চা, কফি পান করবেন না। ৪ ঘণ্টা আগে থেকে মিষ্টি ও মশলা জাতীয় খাবারও খাবেন না। রাতে পেটপুরে খাবেন না। এতে করে অস্বস্তিবোধ হয়। ধূমপান ও অ্যালহোকল বর্জন করুন।
৪. নিয়মিত ব্যায়াম করুন। বিছানা আরামদায়ক করুন। শোবার ঘরে ঠিকমতো বাতাস চলাচল করে ও আলোমুক্ত হয়। ঘুমানোর আগে সব স্মার্ট ডিভাইস পরিহার করুন।
৫. অনেকেই ভীষণ নাক ডাকেন। নাক ডাকতে ডাকতে দম বন্ধ হয়ে যায়। দম বন্ধ হওয়া অবস্থায় রোগীর রক্তে অক্সিজেন স্বল্পতা দেখা দেয়। এতে ঘুম ভেঙ্গে যায়। অনেকে আবার শ্বাসকষ্টের সমস্যার জন্য ঠিকমতো ঘুমাতে পারেন না। উচ্চ রক্তচাপ, হূদরোগ, বহুমূত্র ইত্যাদি রোগকে স্লিপ এপনিয়া রোগের সহোদর হিসেবে দেখা হয়। এই রোগীরা সারাদিন তন্দ্রায় থাকে— অফিসে, স্কুলে মনোযোগ থাকে না। দিনে দিনে কর্মক্ষমতা হ্রাস পায়। এই অবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।