শম্পা গুহ ভট্টাচার্য্য: বাড়ির সামনের মাঠে বাবার হাত ধরে আদুল গায়ে 'চলি চলি পা পা' শিখেছে মেয়েটা। সেই শুরু। তারপর প্রতিবেশী ছোট্ট দুষ্টু বন্ধুর সাথে মাঠ জুড়ে ছুটোছুটি। মাঠের মধ্যেই এক্কা দোক্কা।
ফ্রকের আঁচলে লুকিয়ে তেঁতুলমাখা নিয়ে গিয়ে মাঠের কোণায় তার সাথে ভাগ করা। কখনও বা ভাগাভাগি নিয়ে ঝগড়া গড়িয়ে মারামারির সূত্রপাত।
বৃষ্টির বিকেলে দুজনের ইচ্ছে করে কাকভেজা হওয়া আর বাড়ি ফিরে মায়ের ধমকে কাকতাড়ুয়ার মতো মুখ করে চুপ করে যাওয়া। তারপরও মা’র চাপড়। সপাটে। পরদিন সকালে স্কুলে যেতে যেতে মায়ের হাতের জোর নিয়ে জোরকদম আলোচনা। ফেরার পথে টিফিনের বেঁচে যাওয়া আধখাওয়া পেয়ারা দুজনে ভাগ করে খাওয়া।
তারপর একদিন ফ্রকগুলো গায়ে ছোটো লাগে। মাথার দুপাশে হঠাৎ করেই দুটো বেণী কাঁধ বেয়ে নেমে আসতে চায়। বন্ধুটা এখন কেমন যেন! তেঁতুলমাখার থেকে ক্রিকেট বেশি পছন্দ করে। সে নিজেও মাঠের এক্কা দোক্কা ছেড়ে বাড়ির পৈঠেতে বসে ছোটোবোনের পুতুল নিয়ে খেলাঘর বাঁধতে ব্যস্ত।
পুতুল খেলতে খেলতে একদিন এক ডিউজ বল ছুটে এসে পায়ে ধাক্কা দিয়ে যেন বলে "সে আসছে। আমাকে নিতে আসছে। "
নীচু হয়ে বল কুড়িয়ে দেখতে যাবে - অমনি সেই এক্কা দোক্কার বন্ধু সামনে দাঁড়িয়ে বল চায়।মেয়েটার বাঁ হাত হঠাৎই পিঠে চলে যায় সামনে ঝুঁকে পড়া স্কার্টের ব্লাউজ সামলাতে।
বল ফেরত দিয়ে একছুটে আয়নার সামনে। আর একবার ঝুঁকে দেখে নেওয়া তখন ড্রেসটা ঠিক কতটা অবাধ্যতা করেছিল।
আসলে আয়নার সামনে মেয়ের মনে একমাঠ লজ্জা - পিউবার্টির সূচনা - নারীত্বের প্রথম আস্বাদন।